অমর একুশে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। একুশের চেতনা থেকেই মহান যুদ্দ ও বাংলাদেশের সৃষ্টি। একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জনগণের গৌরবোজ্জ্বল একটি দিন।
এটি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবেও সুপরিচিত।
বাঙালি জনগণের ভাষা আন্দোলনের মর্মন্তুদ ও গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত
একটি দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। একুশ বাঙালি জাতি সত্তায় এনে দিয়েছে জাতিগত চেতনা, মুক্তির চেতনা, সাধীনতার চেতনা। ১৯৫২ সালের এই দিনে
(৮ ফাল্গুন, ১৩৫৯) বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার
দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে কয়েকজন তরুণ
শহীদ হন। তাই এ দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।
কানাডার ভ্যানকুভার শহরে বসবাসরত দুই বাঙ্গালী রফিকুল ইসলাম
এবং আবদুস সালাম প্রাথমিক উদ্যোক্তা দিসেবে একুশে ফেব্রুয়ারিকে
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণার আবেদন জানিয়েছিলেন
জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনানের কাছে
১৯৯৮ সালে।বঙ্গীয় সমাজে বাংলা ভাষার অবস্থান নিয়ে বাঙালির আত্ম-অম্বেষায়
যে ভাষাচেতনার উন্মেষ ঘটে, তারই সূত্র ধরে বিভাগোত্তর পূর্ববঙ্গের রাজধানী ঢাকায়
১৯৪৭ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে ভাষা-বিক্ষোভ শুরু হয়। ১৯৪৮ সালের মার্চে এ নিয়ে সীমিত
পর্যায়ে আন্দোলন হয় এবং ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি তার চরম প্রকাশ ঘটে।
ঐদিন সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ১৪৪ ধারা অমান্য করে রাজপথে বেরিয়ে
এলে পুলিশ তাদের ওপর গুলি চালায়। এতে আবুল বরকত, আবদুল জব্বার, আবদুস সালামসহ
কয়েকজন ছাত্রযুবা হতাহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ ঢাকাবাসী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেলে সমবেত হয়।
নানা নির্যাতন সত্ত্বেও ছাত্রদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ জানাতে
পরের দিন ২২ ফেব্রুয়ারি পুণরায় রাজপথে নেমে আসে। বাংলা ভাষাটি দক্ষিণ এশিয়ার পূর্বে অবস্থিত
বঙ্গ নামক ভৌগোলিক অঞ্চলের স্থানীয় ভাষা,
এই অঞ্চলটি বর্তমানে রাজনৈতিকভাবে স্বাধীন রাষ্ট্র
বাংলাদেশ ও ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে গঠিত।
এছাড়াও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য এবং মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীও বাংলা ভাষাতে কথা বলে। পালি ও প্রাকৃত
ভাষার মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়েছে, এবং পরে গিয়ে সংস্কৃতের প্রভাব রয়েছে।
বাংলা ভাষাটি প্রায় ২৮ কোটি মানুষের মাতৃভাষা এবং বিশ্বের বহুল প্রচলিত
ভাষাগুলোর মধ্যে একটি (ভাষাভাষীর সংখ্যানুসারে এর অবস্থান চতুর্থ[২] থেকে সপ্তমের[৩] মধ্যে)।